কালোজিরার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম জানুন এ টু জেট
পেটের চর্বি কমানোর সহজ উপায়প্রিয় পাঠক, এসএস রাইফেল আইটিতে আপনাকে স্বাগতম। এই ওয়েবসাইটে আমরা প্রতিদিন স্বাস্থ্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে থাকি। আজকে আমরা কালোজিরার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো। এছাড়াও আরো আলোচনা করবো কালোজিরাতে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে তা সম্পর্কে।
নিচের এই আর্টিকেলে আমরা চেষ্টা করেছি কালোজিরার উপকারিতা কি, কিভাবে খাবেন এবং কালোজিরাতে যে পোষ্টি উপাদানগুলো রয়েছে তার বর্ণনা ও খাওয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কিত সঠিক তথ্য সম্পর্কে ধারণা দেওয়ার। এছাড়াও এর সাথে সম্পর্কিত বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি যেগুলো আপনার অনেক উপকারে আসবে। তাহলে এবার চলুন সেই সকল বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জেনে নেওয়া যাক।
ভূমিকাঃ কালোজিরার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
প্রিয় পাঠক, কালোজিরা আমরা সবাই চিনি। ইংরেজিতে কালোজিরা নাইজেলা সীড নামে পরিচিত। বাঙালির পাঁচফোড়ন থেকে শুরু করে সিঙ্গারা এবং নানান রকম খাবারে কালোজিরা না হলে চলেই না। আয়ুর্বেদি, ইউনানী ও কবিরাজি চিকিৎসায় কালোজিরার ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে।
মসলা হিসেবেও কালোজিরার চাহিদা ব্যাপক। এছাড়াও ইসলাম ধর্মে কালোজিরার গুরুত্ব হিসেবে বলা হয়েছে “তোমরা কালোজিরা ব্যবহার করবে, কেননা এতে একমাত্র মৃত্যু ব্যতীত সর্ব রোগের মুক্তি রয়েছে”।
তাছাড়া বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেও প্রমাণিত হয়েছে কালোজিরা একটি সুপার ফুড। এতে মানব দেহের জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় সব পুষ্টি উপাদান রয়েছে। বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার ছাড়াও কালোজিরার বীজ থেকে তেল পাওয়া যায়। যা মানুষের শরীরের জন্য খুবই উপকারী।
বিভিন্ন গবেষণায় কালোজিরা সম্পর্কে
কালোজিরাকে সব রোগের ওষুধ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। অন্যান্য সব ভেষজের মতো কালোজিরা কে নিয়েও গবেষণা কম হয়নি। ১৯৬০ সালে মিশরের গবেষকরা নিশ্চিত হন যে, কালোজিরায় বিদ্যমান নাইজেলনের কারণে হাঁপানির উপশম হয়।
আরও পড়ুনঃ আর্টিকেলে স্ক্রিনশট যুক্ত করার নিয়ম
জার্মানির গবেষকরা বলেন কালোজিরায় অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি মাইকোটিক প্রভাব রয়েছে। এটি বোনম্যারো ও প্রতিরক্ষা কোষ গুলোকে উত্তেজিত করে এবং ইন্টারফেরন তৈরি বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে আমেরিকার গবেষকরা প্রথম কালোজিরার টিউমার বিরোধী প্রভাব সম্পর্কে মতামত দেন।
শরীরে ক্যানসার উৎপাদনকারী ফ্রি রেডিক্যাল অপসারিত করতে পারে কালোজিরা। মোটকথা হলো কালোজিরা সব ধরনের রোগের বিরুদ্ধে তুলনাহীন।
কালোজিরাতে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে জেনে নিন
কালোজিরা সম্পর্কে আমাদের খুব একটা ধারণা নেই বললেই চলে। যার কারণে বেশিরভাগ মানুষই কালোজিরাকে রান্নার মসলা হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন। কালোজিরাতে অনেক ধরনের পুষ্টিউপাদান বিদ্যমান যা আপনি হয়তো জানতেন না।
আরও পড়ুনঃ শরীরের ফিটনেস ধরে রাখার সহজ উপায়
কালোজিরার অন্যতম উপাদানের মধ্যে আছে নাইজেলোন, খাইমোকিনোন ও স্থায়ী তেল। এতে আরো আছে আমিষ, শর্করা ও প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড সহ নানা উপাদান। পাশাপাশি কালোজিরা তেলে আছে লিনোলিক এসিড, অলিক এসিড, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, সেলেনিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, বিটামিন বি২, নিয়াসিন ও ভিটামিন সি।
এর মধ্যে রয়েছে ফসফেট, লৌহ, ফসফরাস, কার্বোহাইড্রেট ছাড়াও জীবাণুনাশক বিভিন্ন উপাদান সমূহ। ক্যান্সার প্রতিরোধ কেরোটিন ও শক্তিশালী হরমোন, প্রস্রাব সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, পাচক এনজাইম ও অম্লনাশক উপাদান এবং অম্ল রোগের প্রতিষেধক। এই পুষ্টি উপাদান গুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
কালোজিরার তেলের উপকারিতা
কালোজিরার বিজ থেকে যে তেল পাওয়া যায় সেটা মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কালোজিরার তেলের প্রায় ১০০ টিরও বেশি উপযোগী উপাদান আছে। এতে আছে প্রায় ২১ শতাংশ আমিষ, ৩৮ শতাংশ শর্করা এবং ৩৫ শতাংশ ভেষজ তেল ও চর্বি। কালোজিরার তেল ব্যবহারের ফলে চুল পড়া রোধ করা যায়।
এই তেল নিয়মিত চুলের গোড়ায় মালিশ করলে চুলের গোড়া মজবুত হয় এবং চুলে পুষ্টি জোগায়। যার ফলে চুল পড়া বন্ধ হয়। এছাড়াও কালোজিরা খেলেও চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করে। এটা যদি আপনি নিয়মিত খেতে থাকেন তাহলে আপনার চুল পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি পাবে। যার ফলে চুল পড়া বন্ধ হবে।
১০ থেকে ১২ ফোটা কালোজিরা তেল গরম পানিতে মিশিয়ে খেলে বাত রোগের উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও মাথাব্যথার ক্ষেত্রেও এই তেল বেশ কার্যকরী। কপালের দুই পাশ এবং কানের পাশে দিনে তিন-চার বার কালোজিরার তেল মালিশ করুন মাথা ব্যথা ভালো হয়ে যাবে। প্যারালাইসিস ও কম্পন রোগে কালোজিরার তেল মালিশ করলে আশ্চর্যজনক ফল পাওয়া যায়।
এছাড়াও যে কোন ধরনের ব্যথা কমাতে কালোজিরার তেলের জুড়ি নেই। তার জন্য কালোজিরার তেল হালকা গরম করে নিয়ে ব্যথার জায়গায় মালিশ করুন ব্যথা সেরে যাবে। বিশেষ করে বাতের ব্যথায় এই তেল আপনাকে বেশ উপকার দিবে। ব্যথাযুক্ত ফোঁড়া সারাতে কালোজিরা সাহায্য করে। তিলের তেলের সাথে কালোজিরা বাটা বা কালোজিরার তেল মিশিয়ে ফোড়াতে লাগালে ব্যথা উপশম্য হয় ও ফোড়া সেরে যায়।
কালোজিরার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
কালোজিরা খাওয়ার অসংখ্য উপকারিতা রয়েছ। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু উপকারিতা নিচে বর্ণনা করা হলো। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বাড়ে: নিয়মিত কালোজিরা খেলে মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। এর সঙ্গে এটি প্রাণশক্তি বাড়ায় ও ক্লান্তি দূর করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে: কালোজিরা খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী হয়। নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। এতে করে যে কোন জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে এবং সার্বিকভাবে স্বাস্থ্য কে উন্নত করে।
হজম শক্তি বাড়ায়: কালোজিরা খেলে হজম শক্তিও বৃদ্ধি পায়। হজমের সমস্যা থাকলে এক থেকে দুই চামচ কালোজিরা বেটে পানির সঙ্গে খেতে থাকুন। এভাবে প্রতিদিন দুই-তিনবার খেলে এক মাসের মধ্যে হজম শক্তি বেড়ে যায়। এর পাশাপাশি আপনার পেট ফাঁপা সমস্যা থাকলেও দূর হবে। জ্বর, ব্যথা, সর্দি-কাশিতে উপকার: আপনার যদি জ্বর ব্যথা সর্দি বা কাশি হয়ে থাকে তাহলে এক চা চামচ কালোজিরার সাথে ৩ চা চামচ মধু এবং দুই চা চামচ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে প্রতিদিন একবার করলে সেবন করুন। এভাবে কিছুদিন খেলে দারুন ফল পাওয়া যাবে।
বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি করে: মায়েদের বুকের দুধের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে কালোজিরার কোন জুড়ি নেই। প্রতিদিন রাতে শোবার আগে ৫ থেকে ১০ গ্রাম কালোজিরা মিহি করে দুধের সঙ্গে খেতে থাকুন। ১০ থেকে ১৫ দিনেই দুধের প্রবাহ বেড়ে যাবে। এছাড়াও এই সমস্যার সমাধানের কালোজিরা ভর্তা করে ভাতের সঙ্গে খেতে পারেন। লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ করে: লিভার ক্যান্সারের জন্য দায়ী আফলা টক্সিন নামক বিশ ধ্বংস করে। তাই লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে আজ থেকে কালোজিরা খেতে পারেন।
রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমায়: ডায়াবেটিসের রোগীরা এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা একগ্লাস পানির সঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেয়ে দেখুন। রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করবে। যৌন ক্ষমতা বাড়ায়: নিয়মিত কালোজিরা খেলে যৌন ব্যাধি ও স্নায়ু ব্যাধি দুর্বলতায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। এটি নারী এবং পুরুষ উভয়েরই যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে পুরুষদের খুবই উপকারী। আপনি নিয়মিত কালোজিরা সেবনের মাধ্যমে পুরুষত্বহীনতা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
হৃদরোগের উপকার -- চা বা গরম পানির সাথে কালোজিরা তেল মিশিয়ে পান করলে হৃদরোগ থেকে উপকার পাওয়া যায়। এর পাশাপাশি শরীরের বাড়তি মেদও কমে যায়। এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, মুখে অরুচি, শরীর ব্যথা, গলা ও দাঁতের ব্যথা, মাইগ্রেন, হাঁপানি নিরাময়ে কালোজিরা খুবই উপকারী। তাছাড়া ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কালোজিরা সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
কালোজিরার ক্ষতিকর দিক কি
সত্যি কথা বলতে কালোজিরার ক্ষতিকর কোনো দিক নেই তবে বেশি বেশি কালোজিরা সেবন করার কারণে আপনার শরীরে ক্ষতি হতে পারে। কারণ এতে পিত্ত সমস্যা রয়েছে যেটা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতি । সন্তানসম্ভবা নারীদের ক্ষেত্রেও কালিজিরা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, কালিজিরা শরীর অতিরিক্ত গরম করে।
কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম হাদিস
ইসলামে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম নিয়ে বেশ কিছু হাদিস রয়েছে। আমরা আপনাদের সামনে কোনোরকম পরিবর্তন ছাড়া সরাসরি হাদিস থেকে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম গুলো আপনাদের নিকট তুলে ধরছি।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন -- “তোমরা কালোজিরা ব্যবহার করবে, কেননা এতে একমাত্র মৃত্যৃ ব্যতীত সর্বরোগের মুক্তি এতে রয়েছে”।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত –- তুমি যদি সকালে এক চামচ কালোজিরা ও এক চামচ পানি মিশিয়ে খাও, তাহলে তুমি সেদিন সারাদিন কোনো রোগে আক্রান্ত হবে না। ইবনে মাজাহ, হাদিস নং- ৩৪৭১।
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত -- কালোজিরা তেল মালিশ করো। এতে প্রতিটি রোগের নিরাময় আছে, ব্যতীত বাতিক ছাড়া। তিরমিজী, হাদিস নং-২৭৩৭।
হযরত আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেন -- “নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যখন রোগ-যন্ত্রণা খুব বেশী কষ্টদায়ক হয় তখন এক চিমটি পরিমাণ কালোজিরা নিয়ে খাবে তারপর পানি ও মধু সেবন করবে।” – (মুজামুল আওসাতঃ তাবরানী।
হযরত কাতাদাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে -- “প্রতিদিন ২১টি কালোজিরার ১টি পুটলি তৈরী করে পানিতে ভিজাবে এবং পুটলির পানির ফোঁটা এ নিয়মে নাশারন্দ্রে (নাশিকা, নাক) ব্যবহার করবে-“প্রথমবার ডান নাকেরছিদ্রে ২ ফোঁটা এবং বামনাকের ছিদ্রে ১ ফোঁটা। দ্বিতীয়বার বাম নাকের ছিদ্রে ২ ফোঁটা এবং ডান নাকের ছিদ্রে ১ ফোঁটা। তৃতীয়বার ডান নাকের ছিদ্রে ২ ফোঁটা ও বাম নাকের ছিদ্রে ১ ফোঁটা।” (তিরমিযী,বুখারী,মুসলিম থেকে নেয়া)
বুখারি শরিফে আরও বর্ণিত রয়েছে, ৫২৮৫।
আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) -- খালিদ ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমরা (যুদ্ধের উদ্দেশ্যে) বের হলাম। আমাদের সংগে ছিলেন গালিব ইবনু আবযার। তিনি পথে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এরপর আমরা মদিনায় আসলাম তখনও তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাকে দেখাশোনা করতে আসেন ইবনু আবূ আতীক। তিনি আমাদের বললেন -- তোমরা এই কালো জিরা সংগে রেখো। এ থেকে পাঁচটি কিংবা সাতটি দানা নিয়ে পিষে খাবে, তারপর তন্মধ্যে যায়তুনের কয়েক ফোটা তৈল ঢেলে দিয়ে তার নাকের এ দিক-ওদিকের ছিদ্র পথে ফোটা ফোটা করে ঢ়ুকিয়ে দেবে।
কেননা আয়িশা (রাঃ) আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেনঃ এই কালো জিরা ’সাম’ ব্যতিত সকল রোগের ঔষধ। আমি বললামঃ সাম- কি? তিনি বললেনঃ সাম- অর্থ মৃত্যু। – (সহীহ বুখারি)
হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত -- যে ব্যক্তি প্রতিদিন সকালে সাতটি কালোজিরা খাবে, সে কোনোদিন পাগল হবে না এবং কোনোদিন কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হবে না। সহীহ বুখারী, হাদিস নং- ৫৬৮৭।
হযরত আবু বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত -- তোমরা তোমাদের নাকের ভেতর কালোজিরা তেল দাও। এতে প্রতিটি রোগের নিরাময় আছে, ব্যতীত বাতিক ছাড়া। ইবনে মাজাহ, হাদিস নং- ৩৪৭২।
হজরত আবু দারদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রয়েছে – ‘’রোজ সকালে সাতটি করে কালোজিরা খাও, এতে প্রতিটি রোগে নিরাময় আছে, ব্যতীত বাতিক ছাড়া।’’ তিরমিজি, হাদিস নং- ২৭৩৬।
এছাড়াও, আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রয়েছে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সঃ) বলেছেন --
عَلَيْكُمْ بِهَذِهِ الْحَبَّةِ السَّوْدَاءِ فَإِنَّ فِيهَا شِفَاءً مِنْ كُلِّ دَاءٍ إِلاَّ السَّامَ ” . وَالسَّامُ الْمَوْتُ
“তোমরা এই কালোজিরা ব্যবহার করবে। কেননা, এতে মৃত্যু ছাড়া সব রোগের প্রতিষেধক রয়েছে।” [সূনান তিরমিযী, হাদিস নম্বরঃ [2048]অধ্যায়ঃ ৩১/ চিকিৎসা (كتاب الطب عن رسول اللَّهِ ﷺ), ইসলামিক ফাউন্ডেশন].
আরও বর্ণিত রয়েছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বলতে শুনেছেন:
فِي الْحَبَّةِ السَّوْدَاءِ شِفَاءٌ مِنْ كُلِّ دَاءٍ، إِلاَّ السَّامَ
“কালোজিরায় মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের আরোগ্য রয়েছে। (বুখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৭ হাদিস নং ৫৬৮৮; মুসলিম ৩৯/২৯ হাঃ ২২১৫). [তথ্যসূত্র– ইসলামিক ফাউন্ডেশন]
উপরে উল্লেখিত হাদিসগুলো থেকে আমরা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারি যে, কালোজিরা খাওয়া নিয়ে আমাদের ইসলাম ধর্মে অনেক নিয়ম রয়েছে। সেগুলো ঠিকমতো অনুসরণ করে যদি নিয়মিত কালোজিরা খাওয়া যায়, তবে সবচেয়ে উপকারী ফলাফল সহজে পাওয়া যাবে। প্রতিদিন সকালে যদি খালি পেটে কালোজিরা খান তাহলে আসলেই অনেক বেশি উপকার পাবেন । বিশেষ করে সকালে খালি পেটে মধুর সাথে কালোজিরা খেলে রক্তে থাকা ক্ষতিকারক পদার্থ দূর করে, গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং নানারকম রোগের প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
শেষ কথা -- কালোজিরার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম
প্রিয় পাঠক, আপনি ওপরের আর্টিকেলের মাধ্যমে কালোজিরার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম, কালোজিরাতে কি কি পুষ্টি উপাদান রয়েছে, কালোজিরার তেলের পুষ্টি উপাদান ও এর ব্যবহারবিধি সম্পর্কিত অনেক তথ্যই জানতে পারলেন। তাই আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনি উপকৃত হবেন এবং এর মাধ্যমে আপনার প্রিয়জনদের উপকৃত হতে সাহায্য করবেন। আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে কিংবা আপনার কোন উপকারে এসে থাকে।
তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধু, প্রিয়জন বা পরিচিতজনদের সাথে শেয়ার করবেন। আর্টিকেলটি পড়ে তারাও উপকৃত হতে পারে। আপনার যদি আরোও কিছু জানার ইচ্ছে থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে পারেন। আমরা চেষ্ট করবো সেগুলোর উত্তর দেওয়ার। আজ এই পর্যন্তই। সব সময় সুস্থ্য থাকবেন এবং ভালো থাকবেন।
ধন্যবাদ।
এসএস রাইফেল আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url